বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৩০ পূর্বাহ্ন
বরিশাল জিলা স্কুলের মালিকানাধীন অর্ধকোটি টাকা মূল্যের জমি দখল করে পাকা ভবন নির্মানের অভিযোগ পাওয়া গেছে ওই স্কুলেরই নৈশপ্রহরি আঃ জব্বারের বিরুদ্ধে। এমনকি তার নির্মানকৃত অবৈধ এ ভবনের জানালাসহ অনেক সরঞ্জামাদি জিলা স্কুলের অভ্যন্তরীন ভবন থেকে খুলে নিয়ে লাগানো হয়েছে। জানাগেছে, আঃ জব্বার জিলা স্কুলের নৈশপ্রহরীর চাকরি নিয়েই বেপরোয়া হয়ে ওঠেন।।
তিনি স্কুল কর্তৃপক্ষকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়ান। জিলা স্কুলের অভ্যন্তরে একাধিক ঘর নির্মাণ করেন এবং নিজে পরিবারসহ বসবাসের পাশাপাশি নিজের আত্মীয়স্বজনেরও বসবাসের জন্য ব্যবস্থা করে দেন। যা সম্পূর্ন বেআইনি। এছাড়াও তার নৈশপ্রহরীর কাজ হলেও তাকে সচরাচর রাতে ডিউটি পালন করতে দেখা যায়না।
এমনটি জানিয়েছেন স্কুলের পাশে বসবাসরত বাসিন্দারা। স্কুলের অভ্যন্তরে অবৈধভাবে ঘর তুলে বসবাসের একপর্যায়ে তার নজর পড়ে পরেশ সাগর মাঠ সংলগ্ন পানির পাম্পের পাশে অবস্থিত জিলা স্কুলের মালিকানাধীন প্রায় অর্ধকোটি টাকা মূল্যের জমির উপর। তিনি ধীরে ধীরে স্কুল কর্তৃপক্ষের অগোচরে এই জমি নিজের আয়ত্তে নেয়ার চেষ্টা চালান এবং একপর্যায় স্কুল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারনে তিনি অবৈধভাবে জমি দখলে নিতে প্রায়ই সক্ষম হন। স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, প্রায় ৮ মাস পূর্বে জিলা স্কুলের মালিকানাধীন অর্ধকোটি টাকা মূল্যের এই জমিতে অবৈধভাবে পাকা ভবন নির্মানের কাজ শুরু করেন।
ওই সময়ে এ বিষয়টি জিলা স্কুলের তৎকালীন প্রধান শিক্ষকের দৃষ্টিগোচর হলে তিনি তাৎক্ষণিক ভবন নির্মানের কাজ বন্ধ করে দেন এবং নৈশপ্রহরী আঃ জব্বারকে মৌখিকভাবে সতর্ক করেন। এর কিছুদিন পরে ওই প্রধান শিক্ষক বদলি হলে আঃ জব্বার পুনরায় তার অবৈধ ভবন নির্মানের কাজ চালিয়ে যান। সরেজমিনে গিয়ে দেখাগেছে, তার নির্মানাধীন অবৈধ এ ভবনের অর্ধাকাংশের ছাদ ঢালাইয়ের কাজ প্রায় শেষ। স্থানীয় জনমনে একটাই প্রশ্ন, কার ইশারায়, কোন শক্তির বলে দিনেদুপুরে ঐতিহ্যবাহি বরিশাল জিলা স্কুলের এই অর্ধকোটি টাকা মূল্যের জমি দখল করে আঃ জব্বার পাকা ভবন নির্মান করেছেন। স্থানীয় ও সুশীল সমাজ এই মূল্যবান জমি বেহাত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে জানান, এখনই এই অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে জিলা স্কুলের এই জমি দখলবাজদের দখলে চলে যাবে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত নৈশপ্রহরি আঃ জব্বার জানান, কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েই ভবন নির্মানের কাজ শুরু করেছি। তখন তার নিকট প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখতে চাইলে তিনি কিছুই দেখাতে পারেননি। উল্টো তিনি বলেন, সবাই সরকারি জায়গা দখল করে ঘরবাড়ি নির্মান করে থাকছে। আর আমরা করলে আপনাদের কি? আপনারা যা পারেন করেন। এ ঘটনায় বরিশাল জিলা স্কুলের বর্তমান প্রধান শিক্ষিকা হিরু রোক্সোনা জানান, বরিশাল জিলা স্কুলের মালিকানাধীন জমিতে পাকা ভবন নির্মান অবশ্যই অবৈধ কাজ। স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকে কখনোই পাকা বাড়ি নির্মানের আদেশ দেয়নি। আর দিতেও পারেনা। তিনি জানান, নৈশপ্রহরী আঃ জব্বারকে পাকা ভবনের নির্মান কাজ বন্ধ করতে বলেছি, কিন্তু তিনি তা শোনেননি। এখন স্কুল কর্তৃপক্ষ কি ব্যবস্থা নিবেন তা কর্তৃপক্ষই বলতে পারবেন।